মাজরুল ইসলামের তিনটি কবিতা
(এক)
বজ্রবিষাদের ঝড়
কাটছে বিনিদ্র রাত।
ধর্ষিত নারীর লাশে পচন এখন
বহনকারী গাড়ি থামে কোথায় !
মাছের মায়ের কান্না একটু দেরিতে শোনালেও চলবে
নিরাপত্তা দাও আগে।
আর জি কর পার্কস্ট্রিট কামদুনি হাঁসখালি বগটুই সন্দেশখালি রানাঘাটের
নিকানো উঠোনে
বিষের জোয়ারে প্রবল ঢেউ !
ফিরে ফিরে আসে এমনই কালোদিন।
বাছাধন,অরণ্যের রোদন থামাও
শূণ্য হৃদয় ভরাতে চাই বসন্ত বাতাসে।
(দুই)
অযোধ্যা পাহাড়ের হাতছানি
বসন্তের পলাশে রাঙা অযোধ্যা পাহাড়
পাপড়িগুলোর হাতছানিতে
সর্পিল কিংবা চড়াই উতরাই পথ পেরিয়ে
পলাশ পিয়াল মহুল শিমুল বনে হত্যে দেওয়া।
পলাশের রঙে আগুন লেগেছে বনে বনে
রক্তিম মেঘ আকাশে ভাসে
এ-যেন অপরূপ দৃশ্য !
স্বাগত জানাই
মুরাডি বাড়ন্তি বৈজন্তী আপার ড্যাম
লোয়ার ড্যাম লেক ও ঝর্না,
গোদরি পাখি,
পাহাড়ের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা ভেটি গাঁয়ের গলি,
তার দোসর হয়ে
সেই গলিঘুঁজিতে ঝুমুরের সুবিন্যস্ত বেশবাস,
আর
নিপুণ শিল্পীর হাতের ছোঁয়ায় গড়া মুখোশ শিল্প।
(তিন)
বর্ষার
ওয়েনাড,২০২৪
বজ্রবিদ্যুৎ ঘন ঘন ব্যাপ্ত শহরের রুক্ষ বুকে
দফায় দফায় মুষলধারে বৃষ্টি
জলমগ্ন পথ-ঘাট।
জলের তোড়ে এক লহমায় মুছে গেল
সাঁকো, রাস্তা,ঘর-বাড়ি,বাথান ও কফি বাগান
চুমরিগুলো জলে ভাসছে নৌকার মত
মৃত্যু শ তিনেক, শুধুই হাহাকার
এ-যেন মৃত্যুপুরী!
ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে প্রাণের খোঁজ
এখনও চাপা পড়ে অনেক লাশ
প্রকৃতির রোষানলের কাছে মানুষ অসহায়
বাসভূমি ছাড়ছে বিপন্ন মানুষ
ওদের পাশে দাঁড়াও।
প্রকৃতির মনোবেদনা ফণা তুলে দাঁড়ানোয়
হাওয়া শাঁ শাঁ বয়
বৃষ্টির তীক্ষ্ণ শলাকা করেছে এমন কোনঠাসা
চোখ বুজে দেখল নিষ্ক্রিয় মানুষ
শূণ্যতায় বর্ষার ওয়েনাড, কেরলের শোকসভা!