মাজরুল ইসলামের একগুচ্ছ কবিতা

মাজরুল ইসলামের একগুচ্ছ কবিতা

অণুকবিতা
 মাতৃ হৃদয়
                         
সময়টা অসহিষ্ণু হয়ে পড়েছে।
দুঃসংবাদ শুধু!
শোকে বিদীর্ণমাণ মাতৃ হৃদয়!

 

কবিতা

(এক)
মায়ের আর্তনাদ

“কারও পানি লাগবে, পানি?”

আমার বাছার হাতে বারুদের বস্তা ছিল না,

ছিল পানির বোতল আর বুলেটিন
এরপরও কেন তার বুক বেয়ে খুন ঝরল!

নিহত, আহত, নিখোঁজ শয়ে শয়ে
লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে
লাশের সংখ্যা।

সন্তানহারা মা চোখের পানি ফেলবে আর কতকাল?
বলো, কতকাল?

সেতো কাউকে খুন করতে যায়নি, শুধু গিয়েছিল
মশা তাড়াবার জন্য
নীতি আয়োগের কক্ষে সাঁজাল দিতে।আর
তুমি তার পেছনে লেলিয়ে দিলে সাঁজোয়া গাড়ি।

কিভাবে পারলে
পাখির মতো গুলি করে মারতে
তুমি দিন কিংবা রাত কিছুই বোঝ না
শুধুই ক্ষমতালোভী।

কেড়ে নিলে বাছারে আমার
তারস্বরে মায়ের আর্তনাদ---
বাড়ি ফিরে আয় বাপ
পড়ালেখা করা লাগবে না, লাগবে না চাকরিও
ক্ষেতে কামলা দিয়ে খাবি !

এই মায়ের আর্তনাদ
পৌঁছাবে কি তোমার কর্ণগহ্বরে কোনদিনও !
                      

(দুই)
   
চিরনিদ্রায় ঢলে পড়ল

নাইটিংগেল পাখিটি আত্মপ্রত্যয় নিয়ে
ঐন্দ্রিজালিক কোটা সংস্কারের দাবিতে
গাইতে এসেছিল।

পাখিটির নাম:
বীর শহিদ আবু সাঈদ !

ওঁর গানতো শুনলই না
উল্টে,
তিরধনুক নিয়ে তাক করা
দরবারি পোশাক পরা শিকারি তার গলা টিপে ধরল আর
চিরনিদ্রায় ঢলে পড়ল, আবু সাঈদ।

 

(তিন)

কোটা সংস্কারের লড়াকু সৈনিক

আবু সাঈদ!
আবু সাঈদ!!
আবু সাঈদ!!!
প্রিয়, তুমি ঘুমাও এখন
কোটা ঝড়ের বিপরীতে স্লোগান বুনতে এসেছে
          দৃঢ়সংকল্প হৃদয়ে জাগরুক থাকা সতীর্থ।

লড়াকু সৈনিক
তুমি কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে দাঁড়াতে ভয় পাওনি
বন্দুকবাজের গুলির সামনে।

আর ফিরবে না ঠিকই, কিন্তু
তোমার সৃষ্ট স্লোগান মুহুর্মুহু ধ্বনিত হচ্ছে মুখে মুখে।

কান্না শুনিয়ে কী লাভ
কান্না শুনিয়ে কিই-বা হবে, কিন্তু
তারপরও মানুষ কাঁদছে
না-কেঁদে থাকতে পারেনি।

দেশদ্রোহী তকমা এঁটে
বেশিদিন বোকা বানানো যায় না
হিসেব বুঝে নেবার সময় আসবেই, আসবে একদিন।

****


Post a Comment

Previous Post Next Post