সৈয়দা বেনজির আসরার-এর চারটি কবিতা














সৈয়দা বেনজির আসরার-এর চারটি কবিতা

 বর্ষা

বর্ষা তুমি এলে, 

অনেকটাই হেলে দুলে

সবকিছু হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো, 

আবার নতুন সাজে সাজলো।

প্রেমের বাঁশি বেজে উঠলো, 

বাতাসে শীতল ছোঁয়া লাগলো।  

বর্ষা তুমি বড়ই মিষ্টি, 

ঝর ঝর ঝরে তোমার বৃষ্টি।

আমার হারিয়ে যায় দৃষ্টি, 

তুমি বর্ষা এক অপরূপ সৃষ্টি।  

তোমার আসাতে  সব লাগে ভালো,

সবকিছুর এক উজ্জ্বল সজীব আলো।

তোমার আসাতে সব সৃষ্টি জীবন ফিরে পায় দ্বিতীয়বার,

তুমি খুবই প্রয়োজনীয় সবার।

তুমি জীবকুলের উপ রক্ষক এর সমতুল্য, 

তুমি যে বর্ষা আমাদের কাছে অপরিহার্য, অমূল্য।

 

 (দুই) 

মাকে বলো চাঁদ মামা 

 

কলাগাছের ফাঁকে ফাঁকে, 

চাঁদমামা আমায় শুধুই দ্যাখে।

জানো,  মা বলতো  চাঁদের মত মেয়ে, 

আমি হাঁটছি, চাঁদ তুমি চলছো পিছু ধেয়ে।

মা নেই,  বলতো চাঁদের  পিছনে চাঁদ যাইগো,

আমি শুধুই শুনে হাসতাম হো হো হো।

মাকে বলবে গো, চাঁদ মামা আমার জন্য, 

কত কিছুই না কিনে দিতো, দিতো রঙিন রঙিন জামা।

মা নেই,  মাকে বড়ই মনে পড়ে,

সবসময় শুধুই চোখে আঁসু ঝরে।

 

তুমি বলো আমি খুব ভালো আছি, 

একটু বেশিবেশি  বলো বাড়িয়ে  মা যেন হয় নিশ্চিন্তি।

তুমি  চাঁদ মামা খুবই যে ভাল,

তোমার কি যে মিষ্টি আলো।

আমি তাহলে যাই, রাত অনেক হলো, 

চোখের পাতায় ঘুম যে নেমে এলো।

 

  (তিন)

পবিত্র এক নারী

 

সোনালী রুপোলী ছিল তার চুলের বাহার,

বিধবার জীবন কাটিয়ে চল্লিশ বছর করেছেন পার।

ধৈর্যশীল ছিলেন, ছিলেন মহীয়সী নারী,

তিনি পড়তেন সাদা ধুতির শাড়ী।

নামাজ, কোরান, সন্তান ছয়টি করেছেন পালন,

ওঁনার ছিল সুন্দর ও কঠোর শাসন।

 

নামতাঁর আহাসানা বিবি,

রুপ ছিল চমৎকার, যাকে বলে সুন্দর ছবি।

চোখের তারা যেন পুতুলের মতো,

রাশিয়ান সুন্দরীদের কাছাকাছি দেখতে লাগতো।

সাদা শাড়িতে যেন পানের এক স্নিগ্ধ পবিত্র সুগন্ধ,

খুবই সুন্দর জীবন যাপন করতেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন।

তিনি ছিলেন আমার দাদিজী,

আজও মনে পড়ে তার সুন্দর প্রতিচ্ছবি।

 

আব্বা খুবই ভালবাসতেন তাকেঁ,

আমার মা ও বলতেন নানান কাহিনী কাজের ফাঁকে ফাঁকে।

বড়ই বিচিত্র এই পৃথিবী, মানুষ চলে যায়,

স্মৃতিগুলি মনে পড়ে, মন করে হায় হায়।

আমাকে খুবই ভালো বাসতেন,

দিতেন অগাধ দোয়া,

বলতেন হবে ভালো, তবেই মান সম্মান যাবে না খোয়া।

 

উনি জান্নাতবাসী হন এই দোয়া চাই সদাই,

যতবার করি আমি নামাজ আদায়

 

  (চার)

চাঁদ মামা

 

ওই আকাশে চাঁদ উঠেছে

সূর্যিমামা গেছে পাটে৷

 

সবাই বলে, চাঁদমামা চাঁদমামা টিপ দিয়ে যা;

আমি বলি, চাঁদমামা আমার বাড়ি বেড়িয়ে যা!

গাছের ফাঁকে ফাঁকে, 

শুধুই দ্যাখে আমাকে!

 

সবাই বলে চাঁদমামা চাঁদমামা টিপ দিয়ে যা;

আমি বলি চাঁদমামা আমার বাড়ি বেড়িয়ে যা৷

ছোট্ট থেকে দেখি তুমি আকাশে!

নামবে কবে তুমি আমার জগতে?

 

সবাই বলে চাঁদমামা চাঁদমামা টিপ দিয়ে যা;

আমি বলি চাঁদমামা আমার বাড়ি বেড়িয়ে যা!

শুধুই দ্যাখে আর আমি হাঁটি,

আমার হয় সে জুটি!

 

সবাই বলে চাঁদমামা চাঁদমামা টিপ দিয়ে যা;

আমি বলি চাঁদমামা আমার বাড়ি বেড়িয়ে যা!

তুমি না এলে 

যাবো তোমার বাড়ি চলে৷

 

সবাই বলে চাঁদমামা চাঁদমামা টিপ দিয়ে যা;

আমি বলি চাঁদমামা আমার বাড়ি বেড়িয়ে যা!

                 


Post a Comment

Previous Post Next Post