এক চিলতে শীতের রোজনামচা
গোবিন্দ মোদক
হেমন্তটা চলে যেতেই
এলো যে শীতকাল,
দেরাজ থেকে বাইরে
এলো উলের পোশাক শাল।
ন্যাপথলিনের গন্ধ
মাখা গরম জামা এলো,
পৌষের সকাল কনকনানো
হিমের পরশ পেলো।
সঙ্গী হলো কাঁথা
কম্বল লেপ আর আলোয়ান,
কাঁপলো শীতে ঠকঠকিয়ে
জোয়ান পালোয়ান !
বাগান জোড়া হলদে
গাঁদা, সরষে ফুলের মাঠ,
বেগুন মুলো পালং
শিমে উঠলো জমে হাট !
কড়াইশুঁটি ছোলার
শাক শীতের সবজি যতো,
বিলের জলে পাখি এলো
পরিযায়ীরা কতো !
খেজুর রস আর নলেন
গুড়ের গন্ধ মন মাতায়,
"জয়নগরের মোয়া
!" হেঁকে ফেরিওয়ালা যায় !
পাড়ার মোড়ে আগুন
জ্বেলে সেঁকে নেওয়া হাত,
খেলার মাঠে ক্রিকেট
ম্যাচে শীতের বাজিমাত !
বাজিয়ে মাইক করছে
কারা মজার চড়ুইভাতি,
ময়দানের সার্কাসেতে
---- বাঘ সিংহ হাতি !
ভ্রমণ-পিয়াসী মন
বলছে বেড়াতে কোথাও যাই,
ডাকছে শীতের সমুদ্র
বা বরফ পাহাড়টাই !
রাঙা ঠাকুমা ছাতে
বসে দিচ্ছে ডালের বড়ি,
তড়বড়িয়ে ছুটছে
যেন শীতের প্রখর ঘড়ি !
রান্নাঘরে মা-কাকিমা
---- গড়ছে পিঠে পুলি,
জিভে জল আনছে পায়েস,
পাটিসাপটাগুলি !
মাঙ্কি টুপি পড়ে
দাদু ---- খুঁজছে হাতের মোজা,
কুন্ডলীটা পাকিয়ে
'ভুলো' শীতে দু'চোখ বোঁজা !
'পুষি' শুয়ে আয়েশী
রোদে পড়ে আসছে বেলা,
গুছিয়ে নাও রে তাড়াতাড়ি,
যাবো যে বইমেলা !
রাত্রি হলেই লেপের
আরাম, সঙ্গী বালাপোষ,
জীবজন্তুও শীতে কাঁপে,
কাঁপে গোরু-মোষ !
তবে, চাবুকের মতো
তীব্র শীতে গরিব লোকের কষ্ট,
শীতকালটা আয়েশী
হলেও অসুবিধাটাও স্পষ্ট !!