নন্দিতা-আজিজুল হাকিম

 


নন্দিতা

আজিজুল হাকিম

 

নন্দিতা, তোমার স্বপ্নিল আহ্বানে আমি সাড়া না দিয়ে পারিনি।   

অন্তহীন তকলিফকে সরিয়ে বাঁধভাঙা জলস্রোতের মতো

দূর্বার গতিতে ছুটে গেছি

তোমার রোদ-ছায়ার নান্দনিক বারান্দায়;  

তোমার লাল-নীল-সোহাগের নেশায়।

 

নন্দিতা, তোমাকে কোল ভরা নুড়ি-পাথর নিয়ে খেলতে দেখেছি।  

আত্মমগ্ন ক্রীড়া চঞ্চল বালিকার মতো সাজিয়েছ পাহাড়ি প্রাসাদ

ভীষণ স্পর্ধায় ছুঁতে চেয়েছ আকাশের নীল;  

পাহাড়ের শিখরে মুখ রেখে আলিঙ্গন করো,

চুম্বন করো মেঘেদের ধূম ।

এক অব্যক্ত আবেগে ধুয়ে যায় তোমার পাহাড়ি-চূড়া বুক

উদ্বেলিত দমকা বাতাস ঢেউ খেলে যায়

তোমার সবুজ বসনা বুকে

সাঁ, সাঁ করে কি কথা যেন বলে যায় কানে কানে

সে কি অমর প্রেম, ভালোবাসার কথা !

আনন্দাশ্রু চুয়ে পড়ে নিঃশব্দে তোমার দেহ বেয়ে

হয়তো কোন এক সাগরের নেশায় ।

 

নন্দিতা, তোমার অদৃশ্য উষ্ণ হাতছানিতে বিমোহিত হয়েছি বারবার;

তাই তো ভোরের বেলায় তোমার মাধবী রূপসী নেশায়

আকাশের নিমগ্নতা নিয়ে চেয়ে থেকেছি তোমার পানে

অনন্ত পিপাসা নিয়ে।

তোমার সৌন্দর্যের শিখর ছুঁবো বলে

ডনকুইজোটের মতো জীবনকে বাজি রেখে

সর্পিল গিরি-কন্দর, অসূর্যমপস্যা বনানী-পথ,

পিচ্ছিল পাথরের পর পাথর খণ্ডে

মৃত্যুর ছাড়পত্রকে চুম্বন করে গেছি

প্রতি পায়ের তলায় নিষ্পেষণ করেছি ক্লান্তির চিহ্ন।

একটু একটু করে ছুঁয়ে গেছি তোমার লাবণি পাপড়ি;  

তোমাকে আবিষ্কারের নেশায়, বিজয়ের নেশায় 

আমি তো কাপুরুষ হতে পারিনি, নন্দিতা।

 

যখন এক চিলতে সূর্যের ছটা

অযুত খণ্ড মেঘের ফাটল দিয়ে

তোমার পাহাড়ি চূড়া চুম্বন করে যায়,  

তখন স্বর্ণালী নিরব উল্লাসে মেতে উঠো তুমি;

বহুদূরের চূড়া হতে অপলক অবাক চোখে চেয়ে থাকি আমি।

 

নন্দিতা, তোমার সেই চড়াই উতরাই পেরিয়ে

কাব্যিক ছন্দে চলা পথ ধরে

আমি আবারও যাব চলে

সেই অনন্ত লাবণ্যতায় মোড়া

লাল পেড়ে আঁচলের ফাঁকে লালিমা সুন্দরী ভেনাস

আর মহুল-মাধুরীর নেশায়।

 

রচনাঃ ১৬ ও ১৭/০৯/২০২১ রাত       

2 Comments

  1. Very attractive poem. I am charmed.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।

      Delete
Previous Post Next Post