হজরত মোহাম্মদ (সাঃ)-এর কাব্যজীবনী
আব্দুল্লাহ
আল আযীয
(৪র্থ
পর্ব)
বংশ
পরিচিতি
বিসমিল্লাহির
রহমানির রহীম
[নবীজির নাম এলে
সাঃ এবং অন্যান্য নবীগনের
নাম এলে আঃ পড়া আবশ্যক]
আদমেরই থেকে হয়েছে
শুরু বংশানুক্রমে
নবীদের আগমন
ইব্রাহিমের পরে তা
হয়েছে দুই ভাগে বিভাজন।
খলিলুল্লাহর দুই
সন্তান ইসমাঈল ও ইসহাক
দুজনই ছিলেন পয়গম্বর
প্রমাণে কুরআন পাক।
ইসহাক নবীর পুত্র
ইয়াকুব ইসরাইল নামেও ক্ষ্যাত
বনু ইসরাইল তাঁহারই
গোত্র বিশ্বজুড়িয়া জ্ঞাত।
পয়গম্বর রূপে বনু
ইসমাঈলে শুধু দুইজনই সামিল
মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ
আর স্বয়ং ইসমাঈল।
ইসমাঈল হইতে ক্রমান্বয়ে
সময়ের সংজ্ঞায়
হাশিম ইবনে আব্দে
মান্নাফ গোত্রে হাবীব
এসেছেন দুনিয়ায়।
হাশিম ছিলেন তাঁহার
গোত্রে বিত্তশালী ও গুণী
গোত্রীয় স্বচ্ছলতায়
কোরাইশগন তাঁহারই কাছে ঋণী।
ব্যাক্তিত্বে তাঁহার
আছিল ব্যবসায়ীকের মন
বছরে দু'বার বাণিজ্যপ্রথা
তিনিই করেন প্রচলন।
প্রণিধানযোগ্য ঘটনা,
এখানে উল্লেখযোগ্যও তাই
বাণিজ্যোদ্দেশ্যে
যাত্রা হাশিম করিলেন সিরিয়ায়।
যাত্রাপথে বনু নাজ্জার
গোত্রের আমরকণ্যার সাথে
বিবাহসূত্রে আবদ্ধ
হলেন পৌঁছাইয়া মদীনাতে।
পিত্রালয়ে স্ত্রী
সালমাকে রাখিয়া রওনা হয়ে
মৃত্যুবরণ করিলেন
তিনি ফিলিস্তিনের
গাজা শহরেতে গিয়ে।
মদীনায় তাঁর স্ত্রী
তখন অন্তঃসত্ত্বা ছিলো
তাঁরই গর্ভে শায়িবা
ওরফে আব্দুল মুত্তালিব এলো।
শায়িবার বিষয় হাশিমী
গোত্র জানিতোনা বহুকাল
হাশিমের ভ্রাতা মুত্তালিব
জানিলো যখন তখন শায়িবা
দশ থেকে বার সাল।
মুত্তালিব শায়বাকে
তাঁর মা'র কাছ হতে যেঞ্চে
পুত্র স্নেহে মানুষ
করেন রাখিয়া নিজের কাছে।
ইতিহাস মতে শায়বাকে
নিয়ে মুত্তালিব আসিলেন
স্বগৃহেতে যবে
বালককে তাঁহার দাস
বলিয়া ধারণা করিলো সবে।
এভাবেই তাঁর পরিচিতি
হলো আব্দুল মুত্তালিব নামে
খোদার হাবীব এসেছেন
ক্রমে তাঁরই বংশানুক্রমে।
ইয়েমেন সফরে মুত্তালিবের
মৃত্যুবরণ হলে
আব্দুল মুত্তালিব
অভিষিক্ত হলেন তাঁর মর্যাদাস্থলে।
আঁধারের যুগে আঁধারের
দেশে সজ্জন ছিলো যাঁরা
বনু হাশেমের গোত্রই
ছিলো তাঁহাদের মাঝে শেরা।
প্রতিপত্তি ও খ্যাতিতে
সে ছিলো মক্কার শেরা লোক
নিপীড়িত মানুষের
দিকে ছিলো তাঁর খোলা চোখ।
এই গোত্রেরই উত্তরসূরি
আব্দুল মুত্তালিব
সম্ভ্রান্ত বণিক
ছিলো সে ছিলোনা কৃপণ ও ক্লীব।
যেহেতু সে ছিলো স্বনামধন্য
হাশিমের সন্তান
পিতৃসূত্রে পেয়েছিলো
সে পরিচিতি-সম্মান।
চাচার জনপ্রিয়তাতেও
ছিলো আব্দুল মুত্তালিবের ক্ষ্যাতি
ইহা ছাড়া তাঁর নিজেরও
আছিলো যশ ও জনপ্রীতি।
ঐতিহাসিক ঘটনা দুটি
ঘটেছিলো তাঁকে নিয়ে
মানুষ সতত দেখতো
তাঁকে তাইই সশ্রদ্ধাদৃষ্টি দিয়ে।
যমযমকূপের পনর্খনন
হয়েছিলো তাঁরাই কালে
হস্তীবাহিনী হস্তীযুদ্ধে
হেরেছিলো জানে-মালে।
দুটি ঘটনাই সুসম্পর্কিত
আব্দুল মুত্তালিবের সাথে
কাবার চাবিও বংশসূত্রে
থাকতো তাঁহারই হাতে।
আরব অনারব দূর বিদেশের
সমস্ত হাজীগন
সকলেই পেত আব্দুল
মুত্তালিবের সেবা ও আপ্যায়ন।
কোরাইশ নামে ছিলো
পরিচিত তাঁহার বংশধর
দশ সন্তানে আলোকিত
ছিলো আব্দুল মুত্তালিবের ঘর।
চতুর্থ পুত্র আব্দুল্লাহ
ছিলো সে সুদর্শন
তেমনি সে ছিলো সচ্চরিত্র
ও সবার স্নেহভাজন।
যবীহ নামেও গোত্রে
সমাজে ছিলো তাঁর পরিচিতি
সৎগুনে আর সদ্ব্যবহারে
ছিলো তাঁরও যশ ক্ষ্যাতি।
আব্দুল্লাহর ছিলোনা
তেমন বিষয় ও বৈভব
স্বাচ্ছন্দ্য বাদ
দিয়ে ঘরে ছিলো তাঁর বাকি সব।
অভাবের ঘরে অনটন
ছিলো তবু ছিলো প্রেম-প্রীতি
লোকের যত্ন-আত্তি-ব্যবহারে
ছিলো তাঁর বহু খ্যাতি।
আমিনা নামের বিদূষীর
সাথে বিবাহ হবার পরে
বাণিজ্য নিয়ে সিরিয়ায়
যান, চলে যান চিরতরে।
ফিরিবার পথে মদীনায়
তিনি রচেন নিদ্রাজাল
নাবেগার গৃহে সমাহিত
হন হইলে ইন্তেকাল।
নবীজি তখনও মায়ের
জঠরে আসেননি দুনিয়ায়
মতান্তরে দুমাস বয়সে
পিতার মৃত্যু হয়।