নদী
স্বপন কুমার পাল
আমি মাঝে মাঝে ছুটে যায় নদীর কূলে
আমার প্রিয় নদী তুমি কেমন আছো জিজ্ঞেস করি।
নদী উত্তর দেয় ভালো নেই ভালো নেই
আমি জিজ্ঞেস করি কেন ভালো নেই
নদী বলে, আমার বুকের উপরে অত্যাচারীদের হাত ক্রমশ বাড়তে বাড়তে দীর্ঘ হয়েছে।
আমার নাব্যতা কমেছে।
হাজার জনজাল প্লাস্টিক কারখানার বিষাক্ত তরল আমার বুকের উপর প্রতিদিন ফেলে যায়।
আমি মুখ বুঝে সহ্য করি।
বেদনায় আমার বুক ফেটে কান্না আসে।
কেউ কি শোনে আমার করুণ কান্না!
আমার ত সারা বছরই অশ্রু ভিজে থাকে।
কেউ এসে আর আমার সাথে কথা বলে না।
আজ থেকে বহু বছর আগে যখন ছিল না
এত কলকারখানা, মানুষের মনে হিংসা, লোভ, পাপীদের হাতছানি
সেই সময় আমার বুকে আমার কোলে কত প্রাণীরা খেলে বেড়াতো
মাছেরা ঝাঁকঝাঁক দাপিয়ে জল
উথাল-পাথাল করত।
মাঝিদের কত ভাটিয়ালি সুর শোনা যেত।
আজ সবই বিস্মৃত।
এসব শুনে আমি মাথা নিচু করি।
একদিন এই নদীর তীরে মানুষের বসতি
স্থাপন।
একদিন এই নদীর কূলে কৃষকের হাল চাষ হয়েছিল।
মানুষের ঘরে ঘরে শস্যভান্ডার মজুদ হয়েছিল
নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল নগর-বন্দর সভ্যতা।
সেই নদীকেই ধ্বংস করে মানুষ মজেছে এক ভয়ঙ্কর খেলায় ।
আমরা কবে বুঝব নদী আমাদের মা।
মাকে অপমান করলে কখনোই সন্তানেরা ভালো থাকেনা।