গল্প
স্মৃতিদের চোরাবালি
সুমি
দাস
“প্রাক্তন আজ রয়েছে
অনেক দূরে
রাত তখন প্রায় ১২:০০টা । নেশাগ্রস্ত হয়ে বাড়ি ফেরে সাগর । ঢুলুঢুলু নয়নে নেশার ঘোরে তার মনে পড়ে ঝিনুকের কথা যে কিনা এখন তার প্রাক্তন । যার সাথে বিচ্ছেদ হয়েছে প্রায় চার বছর আগে । ঝিনুক এখন অন্য কারোর । তবুও সাগর ভাবছে ঝিনুক যদি আবার ফেরে তার জীবনে । মদের নেশায় ঝিনুকের ভাবনায় সাগর সেদিন ঝিমিয়ে পড়ে গভীর ঘুমে ।
পরের দিন সাগর যখন অফিসে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করছে তখন সে কলিংবেলের শব্দ পেয়ে দরজা খুলতেই দেখে তার সেই প্রথম প্রেম ঝিনুক তার সামনে হাজির । সে সাগরকে বলে যে সে আবার ফিরতে চায় সাগরের জীবনে । হতভম্ব হয়ে প্রত্যুওরে সাগর তখন বলে সময় কেটেছে অনেক, বেড়েছে ভীষণ দূরত্ব তাই সময়ের সাথে সাথে আজ আমাদের সম্পর্ক শুধুই প্রাক্তন।তাই বিচ্ছেদের পর আজ হঠাৎ কেন আবার ফিরে দেখা ? তখন ঝিনুক একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল সাগরের দিকে । কিছুক্ষন চেয়ে থাকার পর কাতর কন্ঠে ঝিনুক বলল আর কী তবে ফেরা যায়না নীলিমার দিনে ? ঠিক যেরকম করে রামধনুকের দিনে বলতো ঠিক সেই রকম করেই যেন বললো মেয়েটা । সে বলল, বেলা শেষে আবারও না হয় আমি রবো তোর । আমি আবারও না হয় ছন্দ হবো তোর লেখা গানে । তুই আবারও না হয় শুরু কর প্রেমের গল্প লেখা । আবারও না হয় কলম চলুক তোর মনের ম্যাগাজিনে । আমি না হয় আবারও পড়বো তোর লেখা গল্প । চল না হারিয়ে যাই সেই পুরোনো বিকেলে ঘুরে দেখি স্মৃতিদের ফিরে । তুই আবারও না হয় করিস ছোটোখাটো ভুল । আমি আবারও না হয় তোর ভুলগুলো শুধরে দেবো । খোলা মাঠের মাঝে দাঁড়িয়ে শত মানুষের ভিড়ে আমার দু-হাত ধরে আবারও চিৎকার করে আমায় বলবি ‘‘ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি’’? আজও না হয় কলেজের সেরা জুটিটা থাক আমাদের নামে । তখন সাগর আবার বাঁধা পড়ে ঝিনুকের আবেগ ভরা ভালোবাসার কাছে।আর ঝিনুককে জড়িয়ে ধরে বলে,রয়ে যা তবে আমার কাছে বর্তমান হয়ে যাস না কখনও প্রাক্তন হয়ে । আমি আবারও না হয় তোকে আগলে রাখবো,না হয় রাখবো তোকে আবারও স্বতন্ত্র করে।তুই এইভাবেই না হয় চিরকাল রয়ে যা সাগরের ঝিনুক হয়ে।হঠাৎ তারপর ঘড়িতে ঢং ঢং শব্দ! রাতের নেশা কেটে সকালে ঘুম ভেঙে যায় সাগরের । সাগর বুঝতে পারে এটা নিছক এক মিথ্যে স্বপ্ন।আর বিড়বিড় করে বলতে থাকে____
“নেশার ঘোরে স্বপ্নগুলো হয়েছে দিশাহারা
তাই হয়তো কবিতাগুলো রয়েছে ছন্দহারা”।।
********
Tags:
আত্মপ্রকাশ সংখ্যা -
গল্প