ধন্যবাদ, ঋজুলা তোমাকে/মোহাম্মদ আল্লারাখা

 

ধন্যবাদ, ঋজুলা তোমাকে

          মোহাম্মদ আল্লারাখা


তুমি আমার জীবনে প্রথম প্রেমিকা ছিলে 
তোমাকে পাগলের মতো ভালোবাসতাম 
তোমার কাছে ভালোবাসা পেতে চাইতাম
চাইতাম আমার গোপন মনে পুষে রাখা
আমার প্রতি প্রেমিকার আদর যত্ন 
আর অগাধ ভালোবাসার এক নায়াগ্রা জলপ্রপাত। 

দীর্ঘদিনের ঘোরাঘুরি আর ঘনিষ্টতার পর তুমি বললে,
"সরি, বাড়িতে মেনে নেবে না। 
আমায় ক্ষমা করো। 
আমায় ছেড়ে দাও।"
সেই তুমি চলে গেলে!
তোমার কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম। 
ভেঙে চুরমার হয়ে গেছি। 
চোখে অন্ধকার দেখেছি। 
দেখেছি নিজের বুকের ভিতরটা কেমন শূন্য মরুভূমি। 
হঠাৎ প্রবল পিপাসায় কণ্ঠ শুকিয়ে যায়। 
পা টলমল করে হাত অবশ হয়। 
কিছু ধরার কিছু করার ক্ষমতা থাকে না।
তোমাকে ঘিরে জীবন গড়ার স্বপ্ন ভেঙে তছনছ
হয়ে নিজের বাঁচার ইচ্ছেটাই চলে যায়।

নিজেকে সামলাতে সময় লেগেছে। 
বহু বিনিদ্র রজনী কেটেছে। 
গভীর রাতের আকাশে বৃথা শুকতারা খুঁজেছি। 
আকাশের তারাদেরকে হাজারো প্রশ্ন করেছি, 
এ কী হলো, কেন হলো? 
ছায়াপথে একাকী নিঃসঙ্গ নীরবে পদচারণা
করেছি, বুঝতে চেয়েছি, ছুঁতে চেয়েছি
ক্ষতবিক্ষত স্মৃতিগুলি। রক্তাক্ত ক্ষতগুলিতে
প্রলেপ দেওয়ার উপায় খুঁজেছি।

কাকে বলবো!  কে শুনবে!  কাকে দেখাবো!
আমার এই অব্যক্ত বিরহ বেদনার পুঞ্জীভূত
পাহাড়। আগ্নেয়গিরির উত্তপ্ত জ্বালাময়ী লাভার
গলিত দহন। গভীর সাগরের তলদেশে জমে
থাকা অনুভবের রক্তাভ প্রবাল। মরুভূমির
মরীচিকার মায়াবী ছলনায় ছোটাছুটি শেষে
ক্লান্ত অবসন্ন পিপাসার্ত মুমূর্ষু পথিকের করুণ
দশা। হাজার হাজার মাইল ভ্রমণ শেষে আপন
আবাসে সাইবেরিয়ায় ফিরে তুষার ঝড়ে বিধ্বস্ত
পরিযায়ী পাখির ডানা ভেঙে বরফে জমে মৃত্যুর
অন্তিম মুহূর্ত।

সময় বয়ে চলে। রাতের আঁধার শেষে স্নিগ্ধ
প্রভাত আসে। শীতের কুয়াশা কেটে সূর্যের
সোনালী কিরণ ছড়ায়। বসন্তের রঙিন ফুলে
ফুলে হৃদয় উপবন ভরে যায়। নতুন দিনে জীবন
ধীরে ধীরে ছন্দ ফিরে পায়।
ঋজুলা চলে গেছে। ইশিকা এসেছে। 
যা স্বপ্ন দেখতাম, পেতে চাইতাম, 
ইশিকা সব দেয়।
তফাৎ বুঝতে পারি। কার কাছে কী পেতে
চেয়েছিলাম! ভুল জায়গায় আমার স্বপ্ন, আমার
ভালোবাসা গচ্ছিত রাখতে গেছিলাম।
ধন্যবাদ।  অজস্র ধন্যবাদ, ঋজুলা। 
আমায় তুমি প্রত্যাখ্যান করেছো বলে! 

Post a Comment

Previous Post Next Post