আজিজুল হাকিম
আমি পদ্মার শাখাটি পেরিয়ে একটি ঘাটের উপরে গিয়ে দাঁড়ালাম। ঘাট থেকে উঠেই পায়ে হাঁটা তিনটি মাটির পথ তিন দিকে চলে গেছে। পথ তিনটি ঘোলা জলে পরিপূর্ণ সরু নদীর মতো ঘনঘন আঁকবাঁক নিয়ে কাশবনের ভিতরে গিয়ে হারিয়ে গেছে। একটি বৃদ্ধ লোককে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম যে তিনটি রাস্তা তিনটি গ্রামে গিয়ে পৌঁছেছে। তার মধ্যে দুটি গ্রাম কাশবনের উপর দিয়ে দেখা যাচ্ছে আর একটি গ্রাম দেখা যাচ্ছে না। অনেকটা মাঠ পেরিয়ে হয়তো সে গ্রামে পৌঁছানো যায়। যে দুটি গ্রাম দেখা যাচ্ছে সেই সে দুটি ঘাট থেকে প্রায় দুই তিন কিলোমিটার দূরে হবে। অন্য গ্রামটি এখান থেকে প্রায় পাঁচ সাত কিলোমিটার দূরে হতে পারে। সেই গ্রামটির সামনে উঁচু উঁচু কাশের জঙ্গল থাকায় সেটিকে হয়তো দেখা যাচ্ছে না। তার মানে বিস্তৃত একটি মাঠ। আর আমি তো পদ্মার চরে ঘুরতে এসেছি।
আমি এক প, দু পা করে এগোতে লাগলাম। কিছুটা ফাঁকা জায়গা পেরিয়ে পথের দুধারে বড় বড় দূর্বা ঘাসের জমি। মনে হচ্ছে ওই ঘাসের উপর শুয়ে পড়লে সহজে কেউ খুঁজে পাবে না। এমনকি ঘাসের গালিচায় শুয়ে পড়লে দারুণ একটা শিহরণ দেহ ও মনের মধ্যে আসবে। মাঠের মধ্যে মাঝে মাঝে দমকা বাতাস এসে এমনিতেই আমাকে ভীষণভাবে শিহরিত করছে।
আমি এদিকে ওদিকে তাকাচ্ছি আর এক পা, দু পা করে সেই সরু পথ ধরে হেঁটে চলেছি। ঘাসে ঢাকা কয়েকটি জমি পেরিয়ে আমি একটি ঘন কাশবনের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম। সেই কাশবনের মধ্যে দিয়ে ভেজা বালুমাটির পথটি চলে গেছে। পথটিকে দেখে মনে হচ্ছে, যেন সবুজ বনানীর মধ্যে একটি সাদাটে ধূসর ফিতে পড়ে আছে। তার দু প্রান্তে ঘন সবুজ কাশফুলের জঙ্গল মাথা উপরে তুলে হেলছে আর দুলছে। শুভ্রতার ঝলকমাখা সেই কাশফুলগুলি যেন মাথা নত করে আমাকে স্বাগত জানাচ্ছে। আমি যতই এদিকে ওদিকে তাকাচ্ছি ততই যেন আনন্দে উন্মাদ হয়ে পড়ছি। এই দিনের বেলাতেও চারিদিক থেকে ধেয়ে আসছে ঝিঁঝিঁ পোকার কোরাস। যদিও মনের মধ্যে ভীষণ উৎফুল্লতা কাজ করছে; কিন্তু তার সঙ্গে একটি ভয়ও কাজ করছে। এই ঘন জঙ্গলে অনেক বিষধর সাপ থাকতে পারে। যে কোন সময় আমার দিকে তেড়েও আসতে পারে। আমি পায়ে হেঁটে দুর্গম পাহাড়ের চুড়ায় উঠেছি। বিস্তৃত সমভূমি পার হয়েছি। সাগরের ঢেউয়ের ঘাড়ে চেপে সাঁতার দিয়েছি। এমন সব ক্ষুদ্র ভ্রমণের মাধ্যমে আমার যতটুকু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়েছে; তা থেকে মনে হয়েছে, আসলে প্রকৃতির মাঝে যে জায়গাটা যত বেশি সুন্দর সে জায়গাটা তত বেশি ভয়ংকর। এসব জায়গায় একা ঘুরতে যেমন ভয় লাগে তেমনি ভালও লাগে। এই মুক্ত প্রকৃতির মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া যায়, প্রকৃতির সঙ্গে একাত্মা হওয়া যায়।
আমি মনের মধ্যে সাহস নিয়ে সেই এক ফালি ভয়ংকর পথ ধরে সামনের দিকে হাঁটতে শুরু করলাম।
এই জায়গাটা সমতল ভূমি নয়। চড়াই উৎরাই পার হয়ে যেতে হচ্ছে। যে জায়গাটা নিচু সেই জায়গাটা শুকনো নদীর মতো অনেক দূর চলে গেছে। আর যে জায়গাটি উঁচু সেটিও দ্বীপের মতো উঁচু হয়ে ডানে বামে - দুই দিকেই চলে গেছে। রাস্তার দুপাশে যে একই রকম কাশফুলের বনভূমি তা কিন্তু নয়; মাঝে মাঝে ফাঁকা মাঠের মধ্যে গুচ্ছ গুচ্ছ কাশফুলের ঝাড় দেখা যাচ্ছে। যেখানে কাশের জঙ্গল নেই সে জায়গায় হাঁটু পর্যন্ত উঁচু উঁচু বিভিন্ন প্রকার ঘাসে ঢাকা জমি।
বেশ কিছু চড়াই উৎরাই পার হয়ে আমি একটি ঢিবির মতো জায়গায় গিয়ে পৌঁছালাম। সেখানে কিন্তু কাশফুলের তেমন কোনো জঙ্গল চোখে পড়ল না। কেবল হাটু পর্যন্ত বড় বড় দুর্বা ঘাসে ঢাকা বিস্তৃত অনাবাদি জমি আর দূর দূরান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কাশফুলের ঝাড় অবশ্য মাথা তুলে বাতাসে হেলছিল আর দুলছিল।
আমি এদিকে ওদিকে তাকাতেই চমকে গেলাম। এই বিস্তৃত জনমানুষ্যহীন চরাচরে মাত্র একটি কুঁড়োঘর। ঘরটিকে ঘিরে আছে বড় বড় আড়হলের গাছ। দুপাশের সবুজ মখমলকে ছুঁয়ে যাওয়া পথে কয়েক পা এগোতেই একটু দূরে চোখে পড়ল একটি ভীষণ সুন্দর নাদুস নুদুস সোনালী খরগোশ। ও মনের আনন্দে ঘাসের জঙ্গলে চরে বেড়াচ্ছিল। ও আমাকে দেখে পিছনের দু পা তুলে লাফাতে লাফাতে সেই পথ ধরেই কিছুটা দৌড়ে গেল। তারপর একটি ঘন ঘাসের জঙ্গলে হারিয়ে গেল।
একদম বাসন্তী রঙের না হলে হালকা সোনালি মোটা দাগ মাথা থেকে নেমে পিঠের উপর দিয়ে চলে গেছে। বেশ বড় খরগোশ। আমাকে দেখেই নাচতে নাচতে ওই ঝোপের মধ্যে গিয়ে হারিয়ে গেল। একটু পরপর আমার সঙ্গে কয়েকবার উঁকি উঁকি খেলল। তারপর আবার হারিয়ে গেল।
আমি খরগোশটিকে বারবার দেখার চেষ্টা করলাম; কিন্তু আর তার দেখা পেলাম না। ঘাসের ঝোপে কোথায় লুকিয়ে পড়েছে হয়ত।
আমি এগোতে এগোতে সেই কুঁড়োঘরটির কাছে চলে এলাম। সেটি একদম শুন্য ফাঁকা মাঠে একেলা একটি কুঁড়োঘর। প্রথমে মনে হল ঘরটিতে কেউ নেই। সেটির চারপাশে লগড়ার গাছপালায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে। আমি এদিকে ওদিকে তাকালাম। কাউকে দেখতে পেলাম না। তারপর কুঁড়োঘরটি পেরিয়ে আমি যখন এগিয়ে যাচ্ছিলাম; ঠিক তখন দেখলাম, একটি লোক দাওলি নিয়ে জমি নিড়াচ্ছে।
লোকটিকে দেখে মনে হল ওর বয়স সত্তরের কম নয়। মাথাভর্তি সাদা উসকোখুসকো চুল। দাড়ি আর গোফে মুখটি ঢাকা। সেগুলিও ধপধপে সাদা। দাড়ি বুকের নিচ পর্যন্ত নেমে গেছে। হাতের চামড়া জড়ো জড়ো হয়ে গেছে। পিঠ ধনুকের মতো বাঁকা হতে শুরু করেছে।
আমি ধীরেধীরে ওর কাছে এগিয়ে গেলাম। ওকে জিজ্ঞেস করলাম, “এই কুঁড়েঘরটি কার?”
ও বলল, “আমার। কেন? কিছু বলছিলে, বাবা?”
আমি বললাম, “না। তেমন কিছু বলছি না। তবে একটি কৌতূহল বারবার মনের মধ্যে জাগছে - এই শূন্য ফাঁকা মাঠে কেবল একটি কুঁড়োঘর কেন?”
উনি বললেন, “হ্যাঁ বাবা, আমি এই ঘরটায় থাকি। কোনমতেই ছাড়তে পারছি না। দেখছো না, আশেপাশে কেউ নেই। যেদিকে তাকাও দিগন্ত জোড়া মাঠ আর মাঠ।”
আমি বললাম, “এই ফাঁকা মাঠে যখন কেউ নেই তখন আপনিই বা একাই থাকছেন কেন? আপনাকে ভয় লাগে না?”
উনি একগাল হেসে বললেন, “মায়া, বাবা; সবই মায়া। বুঝলে? এই মায়া ছেড়ে একদম কোথাও যেতে মন চায় না। কোথাও গেলে মন যেন ধুকপুক ধুকপুক করে। বুকের ভেতর ধড়পড় ধড়পড় করে। তখন এখানে ছুটে আসতে হয়। আমার ওপারেও বাড়ি আছে। আছে ছেলে-মেয়ে। কিন্তু আমাকে ওখানে থাকতে একটুও ভাল লাগে না। ওখানে একটুও মন টিকে না। আমাকে এখানেই ভালো লাগে। মনে মনে শান্তিও পাই।”
একটু থেমে বললেন, “আর ভয়ের কথা বলছ? ভয় বলে এখন কিছু নেই। তাছারা আমার তো কোন শত্রু নেই, মিত্রও নেই। রাতের বেলায় শেয়াল অবশ্য ঘরের চারপাশে ঘোরাফেরা করে, চিৎকার করে। কিন্তু ওরা ঘরে ঢুকতে পারবে না। রাতে বিশেষ প্রয়োজন হলে লাঠি নিয়ে বের হই।”
ঘরটিকে ভাল করে লক্ষ্য করলাম। ঘরটি উঁচু নয়। তবুও বেশ শক্ত করেই তৈরি করা হয়েছে। ঝড়ে যেন না উড়ে যেতে পারে তার জন্য চারিপাশে লগড়ার গাছ ঘন করে লাগানো হয়েছে। সেগুলিকে আবার খুঁটি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছে।
আমি বললাম, “এখানে তো তেমন কেউ নেই। আপনি কার সঙ্গে গল্প করেন? কারও সঙ্গে গল্প করতে আপনার ইচ্ছে জাগে না?”
উনি দুই ঠোঁটের মাঝে একটু হাসি নিয়ে এলেন। বললেন, “না বাবা, সবই অভ্যাসের ব্যাপার। চেষ্টা করলে সবই পারা যায়। তাছাড়া আমি একজনের সাথে কথা বলি। ও আমার মনের মধ্যে আছে। মনে হয় সেও আমার সঙ্গে কথা বলে। আমি ওর কথা শুনতে পাই।”
“কথা শুনতে পান মানে? এখানে আপনার সঙ্গে কে কথা বলে?”
উনি বললেন, “শুনতে পাই, বাবা। শুনতে পাই।”
তারপর মনে হল উনি কথাটিকে ঘুরিয়ে অন্য দিকে নিয়ে গিয়ে বললেন, “সারাদিন ঝিঁঝিঁ পোকাদের কথা শুনতে পাই। পাখিদের চিৎকার-চেঁচামেচি, ওদের কিচিরমিচির শুনতে পাই। সন্ধ্যা লাগলে শিয়ালের হুক্কি হুয়া শুনতে পাই। সারাদিন বাতাসের শনশন শব্দ শুনতে পাই। মনে হয় ওরা যেন আমাকে গান শোনাচ্ছে। আনন্দের গান। তাছাড়া আরো কত প্রাণী, কিট পতঙ্গ এদিক ওদিকে ঘুরে বেড়ায়। ওদের সঙ্গে মনে মনে গল্প করি।”
আমি বললাম, “কিন্তু আপনার মায়ার কথা তো বললেন না?”
উনি বললেন, “মায়ার কথা কি আর বলব, বাবা। আসলে এটাই আমার ভিটেবাড়ি। এই ভিটের মায়া আমি হারাতে পারছিনা। এখানেই আমার জন্ম হয়েছে। এখানেই আমি বড় হয়েছি। এখানে আমার বিয়ে হয়েছে। সংসার হয়েছে। কত ভালোবাসা কত আদর এই জায়গা জুড়ে। এই বাতাস, এই আকাশের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কত অতীত স্মৃতি।”
“কিন্তু এখানে তো ভিটে বাড়ি থাকার কোন চিহ্ন পাচ্ছি না?”
উনি বললেন, “সবই নদীর খেলা! কখন কিভাবে খেলে। কখন কোন কূল গড়ে আর কোন কূল ভাঙ্গে, সেটা বলা মুশকিল।”
তারপর উনি আবেগের বশবর্তী হয়ে বলতে লাগলেন, “এখানে এক সময় খুব ঘন জনবসতি ছিল। তারপর পদ্মা যেন মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে লাগল। বাংলাদেশের কোল থেকে ভাঙতে ভাঙতে আমাদের গ্রামগুলো সব ভেঙ্গে গিলে গিলে খেল। তারপর আবার যেখানকার পদ্মা সেখানেই ফিরে গেল। কেবল জীবনের গভীরে অজস্র ক্ষত, অগুনিত কান্না দিয়ে গেল। সেই ক্ষত আজও বয়ে বেড়াচ্ছি, এই মাটিতে, এই নির্জন চরাচরে।”
আমি বললাম, “আপনার বাড়িটা কিভাবে ভাঙল?”
উনি বললেন, “কি বলব বাবা, তখন পদ্মা তার রাক্ষসী ঢেউয়ের ঝাঁপটায় চোরের সিঁধ কাটার মতো ঘরবাড়ির তলাকে কেটে কেটে দু-বিঘা তিন বিঘা জুড়ে ফাঁকা করে দিত। তারপর বাড়িঘর আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারত না। দুরমুড় দুরমুড় করে ভেঙে পড়ত। যদিও আমাদের বাড়িটা তখন পদ্মা থেকে প্রায় দুশো গজ দূরে। তার আগেই আমরা বাড়িঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম। তাড়াহুড়ো করে অনেক কিছুই নিতে পারিনি। সাত দিন ধরে এক নাগাড়ে বৃষ্টি। ধানচাল আর জামাকাপড় ছাড়া কিছুই নিতে পারিনি। তখন কিন্তু ভাঙ্গন কদিন থেকে বন্ধ। প্রায় আধ মাইল দূরে আমারা সরে গেছি। ত্রিপল টাঙিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছি। সেদিন দুপুরে বৃষ্টি কমলে আমরা দুজনে দুটি ছাতা মাথায় দিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম।
বাড়িটি তখনও দিব্যি দাঁড়িয়ে আছে। আমরা এক সঙ্গে বাড়িতে ঢুকলাম। দুজনে মিলে ঘর থেকে চৌকিটা বের করলাম। ও আমার মাথায় চৌকি তুলে দিল। আমি হাঁটতে লাগলাম। ও আমাকে বলল, তুমি আগাও আমি বেলুন পিড়ে নিয়ে আসছি।”
আমি পিছনে না তাকিয়েই বললাম, “দেরি করো না - এক্ষুণি বেরিয়ে এসো।”
এই বলে যে একশ ধাপ এগিয়ে গেছি অমনি পিছন থেকে ঘর ভাঙার ভয়ংকর শব্দ শুনতে পেলাম।
আমি চৌকি ফেলে পিছন দিকে তাকালাম, আমার ঘরবাড়ি নেই। আমার সোনালীও নেই। যেখানে ও ছিল সেখানে পদ্মার পানি উথাল পাথাল করছে।
তারপর ভীষণ ক্ষোভ আর ঘৃণায় আমি দুই ছেলে এবং এক মেয়েকে নিয়ে গোঁসাই গ্রাম চলে গেলাম। ওখানে গিয়ে জমি কিনে বাড়ি বানালাম। কাটিয়ে দিলাম দশ দশটা বছর। কিন্তু মনকে কোন মতেই শান্তনা দিতে পারলাম না। কি করব, সেই জমি জায়গা সব বেচে আবার এখানে চলে এলাম। তারপর ওপারে বাড়ি করলাম। আর আমার জন্য এই কুঁড়োঘরটি এ মাঠের মধ্যেই তৈরি করলাম।
আমি বললাম, “তার মানে আপনার স্ত্রী নেই?”
উনি যেন আমার কথায় কেমন উদাস হয়ে গেলেন। মুখটা খুব ভারী হয়ে গেল। তারপর উনি অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে রইলেন। আমি তাকিয়ে থাকলাম ওর দিকে। হয়তো অনেক স্মৃতি হাতরে বেড়াচ্ছেন। দেখলাম, চোখ দিয়ে টপ টপ করে অশ্রুকণা ঝরে পড়ছে। সন্ধ্যার রক্তিম আলোয় সেই অশ্রুকণাগুলি ভীষণ রক্তাভ দেখাচ্ছে।
আমি উনার মুখ থেকে আমার মুখটি তুলে আকাশের দিকে তাকালাম। একখণ্ড মেঘ সূর্যকে ঘিরে একটি নারীর মূর্তি ধারণ করেছে। তার চারপাশ দিয়ে অসংখ্য আলোকছটা এই চরাচরকে মোহিনী মায়ায় উদ্ভাসিত করে তুলেছে। আমি সেদিকেই তাকিয়ে থাকলাম। অপলক চোখ।
উনি অনেকক্ষণ পর খুব কষ্টে মুখে হাসি টেনে বললেন, ওই খরগোশটা সারাদিন আমার সঙ্গে উঁকিঝুঁকি মারে। এখনো আমার কাছে আসে। রাতে আমার বিছানায় শুয়ে থাকে। কিন্তু ধরতে গেলেই পালিয়ে যায়।
***