একটি রূপকথা
লিপিকা ঘোষ ভদ্র
ভিনদেশ থেকে শ্বেতশুভ্র
কপোত,
মায়াবী চোখ মেলে
হঠাৎ এসে বসেছিল আমার প্রেমের দরজায়—
তার পায়ে ঘুঙুরের
ছন্দ, নৃত্যশৈলীর দক্ষতায় মুগ্ধতা শুধু ।
কড়া নেড়ে বলল—চিঠি
! চিঠি !
হাত বাড়াতেই ঝাঁক
বেঁধে উড়ে এল— পিকাসোর সাদা পায়রা...
নীল আকাশ থেকে ওরা
এনেছে পশমভরা রোদ
বন থেকে চন্দনের
গন্ধ, নদী ও বাতাসের গান—
শ্রাবণের মেঘসরোবরে
স্নান সেরে আজ রাতের পূর্ণিমা
আমার জীবনের রূপকথা
রূপ নিয়ে এলো
এই মধুযামিনীর নীড়ে—
স্বর্গ থেকে নেমে
আসা উর্বশীর মতো মনে হলো নিজেকে ।
একদিন বাণভট্ট যেমন
সুহাসিনীর ঘ্রাণে মাতাল হয়েছিল—
আজ রাতের শয্যা আমায়
নরম গন্ধে ভাসিয়ে নিল তার সর্বস্ব—
কৃষ্ণের ব্যাকুল
বাঁশির মতো বেজে উঠল সোহাগী রাতের রাগিণী ।
আমি তার ইচ্ছেপত্র
হাতে হেঁটে যাই কালিন্দী বৃন্দাবন মথুরায়...
উজ্জয়িনী শিপ্রা
শ্রাবস্তী পেরিয়ে শুদ্ধতার ঘ্রাণগ্রস্ত আমি
জেগে বিরহী নারী
সারারাত পাঠ করি শুদ্ধপ্রেমের কথামালা...
তোমায় পরাবো যতনে
তাই আলোর কুসুম ছিঁড়ে বরমাল্য গাঁথি।
নক্ষত্র
পতন
লিপিকা ঘোষ
ভদ্র যে রাতের আকাশে
থাকে অভিসারী চাঁদ
নক্ষত্রের টোল পড়া
মুখের নিটোল চুম্বনে,
ভালোবাসার গ্রন্থিগুলো
রামধনু পাখা মেলে
ছুটে যেতে চেয়েছিলো
আকাশলীনা হয়ে ,
অনন্ত সীমানায় জ্যোৎস্না
চুঁইয়ে পড়া বাসরে ।
তারপর দূষণে আক্রান্ত
প্রেমের মৃত্যূ অপঘাতে
স্বপ্নের আকাশ থেকে
বিরহী নক্ষত্র হোল পতন ।
অসহায় যৌবন পরাভূত
হয় জীবনের কাছে,
তীরবিদ্ধ বুকে এঁকে
দিল বিষ, নীলকণ্ঠের চঞ্চু ।
চুলের ঢল নেমেছে
দেখো,
একেবারে বটের ঝুড়ির
মতো শুদ্ধতা নিয়ে ।
শরীরের চামড়ায় আজ
ইলোরার চারুচীত্রকলা
তুমি প্রথম শিখিয়েছিলে
অপার্থিব প্রেমের কথা ।
মনে আছে,প্রথম তোমার
সাথে ঘুরতে যাবার কথা ?