i বসন্ত মানব/কলমে: এষা বেলা

বসন্ত মানব/কলমে: এষা বেলা

 

বসন্ত মানব 

কলমে: এষা বেলা

(এক)


আরুশি দৌড়াচ্ছে। ওর দৌড়ের মাঝেও এক আশ্চর্য সুন্দর নাচ ফুটে উঠছে। পায়ের প্রতিটি উত্থান পতনে সুন্দর ছন্দ অনুভূত হচ্ছে। সেই দৌড়ের প্রভাবে ওর সারা দেহে নানান ঢেউ যেন আছড়ে পড়ছে এবং জেগে উঠছে।  

লতার মতো ছিপছিপে দেহের মেয়েটি। পাতলা গড়ন। লতানো দেহের প্রত্যেক আকেবাঁকে এক গভীর পেলবতা ফুটে উঠেছে। এক দীপ্তিময় মাধুরিমা ঝলসে উঠছে দেহবল্লরির পরতে পরতে। চরম আকর্ষণীয় ব্যঞ্জনা উদ্বেলিত হচ্ছে সমস্ত দেহের ভাঁজে ভাঁজে। সারা মুখে অম্লান হাসির নিঃশব্দ বিদ্যুৎ খেলে যাচ্ছে অবিরত। মুক্তোর মত ঝকঝকে সাদা ডাগর চোখ দুটি জ্বলে যাচ্ছে অহর্নিশ। হয়ত প্রেমের নেশায় সৃষ্টিলয়ের উন্মত্ত খেলায় মেতে আছে সেই দুটি চোখ। চোখের মাঝে মোহাবিষ্ট আগুন আলোর খেলা। চোখের পাতায় চঞ্চল শিহরণ। চোখের ভ্রূরেখায় মায়াবী আহ্বান। এ আরুশি কোন জগতের বালিকা! কোন আগুনে তৈরি এ বলাকা? কোন শক্তির খেলা ওর দেহ-মন আর চোখের পাতায়? কোন জগত থেকে পেয়েছে এ দৌড়ের যাদুকারিতা? এ কোন বাসন্তিকা? কোথা থেকে আসে এ যৌবনিক হাওয়া ওর উত্তাল দেহপ্রান্তে?                                                            

ও দৌড়াচ্ছে।  হালকা সোনালী সারসের মতো মুখ তুলে ও দৌড়াচ্ছে। সেই দৌড়ের মাঝে যে ছন্দ উদ্বেলিত হচ্ছে তা যেন অপার্থিব কোন কুমারীর অপরূপ বিভা নির্দ্বিধায়, নির্ভাবনায়, অবলীলায় খেলা করছে। দৌড়ের তালেতালে ওর শরীরে উথলে উঠছে উচ্ছ্বল হিন্দোল। পিছনে উড়ছে কালো কুচকুচে, এলোমেলো অবাধ্য চুল। ওর অনুদ্ধত বুক আবৃত করে সাদা ওড়না ঘাড়ের উপর দিয়ে চুলের তালে তালে পিছুনে ঢেউ খেলছে। ওর পাতলা মুখে হালকা হাসির রক্তিম শিহরণ ঝলসে উঠছে। এক চমকিত লালিত্য উপছে পড়া রক্তিম গালে হালকা গোলাপি শিহরণ খেলা করছে। পৃথিবীর কোন পুরুষ এমন অবস্থায় পৃথিবীর সব সুখ, সব দুখ, সব কাজ ফেলে যার দিকে কিছুক্ষণ না তাকিয়ে থাকতে পারে না।  

একমাত্র ইন্দ্রনীল ছাড়া ওর সামনে, ওর আশেপাশে কেউ নেই। এক নির্জন চরাচর। সেই নির্জন চরাচরে কেবল কিছু দূরে ইন্দ্রনীল একা দাঁড়িয়ে। আরুশির সামনে দাঁড়িয়ে সে সেই অপরূপ দৃশ্য দেখছে। আরুশি ধেয়ে আসছে ওর দিকে।  ও সামনের দিকে দৌড়াচ্ছে। ওর পিছনে এক ভয়ঙ্কর সাগরের জলোচ্ছ্বাস দুর্বার গতিতে ধেয়ে আসছে। সেই ঢেউ মাঝে মাঝে যেন আকাশ ছুঁয়ে যাচ্ছে। তবুও ওর চোখে মুখে কোন আতঙ্ক নেই। কোন ভয় নেই। মনে হচ্ছে সেই জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে সে খেলছে। চোখেমুখে এক অম্লান হাসি আর দারুন ছন্দের এক দৌড়। 

সে যখন ছুটতে ছুটতে এসে ঠিক যে মুহূর্তে ও ইন্দ্রনীলের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ল তখনই ওর ঘুম ভেঙে গেল।

ঘুম ভাঙতেই ও চমকে উঠল। ধড়পড় করে উঠে বিছানার ওপর বসে পড়ল। আস্তে আস্তে ঘরের চারিপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নিল। জানালা দিয়ে মরা নদীর দিকে কিছুক্ষণ তাকাল। তারপর ঠোঁটের কোণে একটি হাসির রেখা নিয়ে খাট থেকে নেমে পড়ল। মুখ ফসকে বেরিয়ে পড়ল, কি ভয়ঙ্কর সুন্দর স্বপ্ন! কি ভয়ঙ্কর সুন্দর আরুশি!   

ইন্দ্রনীল বিছানা ছেড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। বারান্দায় কিছুক্ষণ পায়চারী করার পর এক জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়ল। তখনও একাদশীর চাঁদটি ডুবে যায়নি। ওর বুকে এক সুন্দর কলঙ্ক নিয়ে অম্লান ভাবে হেসে যাচ্ছে। তার সেই হাসিতে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা জাম গাছটিও হেসে যাচ্ছে সারাক্ষণ। একটু দূরে নিঃসঙ্গ নারকেল গাছের পাতাগুলিকে ধুয়ে নেমে যাচ্ছে নীলাভ জ্যোৎস্নার রূপোলী সোহাগ। রাতচরা কি পাখি যেন তার মধুর গানে রাতের সমস্ত নিস্তব্ধতাকে ভেঙ্গে খানখান করে দিচ্ছে। পাশের বাগান থেকে ধেয়ে আসছে আমের মুকুলের মধুর সুগন্ধ। কয়েক গজ দূরের আবেনী নদী থেকে উঠে আসছে মিঠে হাওয়ার পরশ।

ও চুপচাপ আবেনীর দিকে চেয়ে থাকল। ওকে আর নদী মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে একটা সাদা ফিতের মতো কাপড় উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে একেবেঁকে চলে গেছে। ও সেদিকেই তাকিয়ে থাকল।

এমনিতেই বেশ কয়েকদিন থেকে তার ঘুম ঠিকঠাক হচ্ছে না। রোম্যান্টিসিজমের জটিল ঝড় মনের মাঝে সর্বক্ষণ তোলপাড় করছে। সে কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না; মেয়েটিকে নিয়ে সে কি করবে। সে কিছুই বুঝতে পারছে না। তার মনের মাঝে ওর অদ্ভুত হাসি, নেশাতুর চাহনি আর বিদঘুটে আচরণ ওকে ভীষণভাবে বিব্রত করে তোলেছে। 

এর আগে ও তেমন কিছুই বুঝতে পারত না। কারণ অন্যদের মতো ওর সঙ্গে দেখা হলে ও এক ঝলক ভেসে উঠত। চোখে মুখে ফুটে উঠতো দারুণ একটা দীপ্তি। নীলাদ্রি ভাবতো অন্যরাও তো এমন করে। কিন্তু এর মত অত আন্তরিকতা দেখায় না। সেদিন ও অবাক হয়েছিল; যখন আরুশি ওর খুব কাছে এসেছিল। একটি সমস্যা নিয়ে ও এসেছিল। এসে দাঁড়াল তার পাশে। ওর হাতে একটি খাতা তুলে দিল। বলল, স্যার, এই বিষয়টি আমি একদম বুঝতে পারছি না। 

তখন নীলাদ্রি খোলা ছাদের উপরে একাকি। স্কুলের খোলা ছাদের উপরে রোদ পোহাচ্ছিল। আরুশি এসে ওর মুখোমুখি নয়, পাশে দাঁড়াল। 

নীলাদ্রি ওর হাত থেকে খাতাটি নিয়ে এবং পকেট থেকে কলমটি বের করে ওকে বোঝাতে শুরু করল। 

এদিকে আরুশি আস্তে আস্তে ওর বাহুর কাছে কখন যেন ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েছে ইন্দ্রনীল তা বুঝতে পারেনি। যখন স্তনের মৃদু চাপ ও অনুভব করল তখন মনটা কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল। 

তবুও মনটাকে শক্ত করে ওকে বুঝিয়ে যাচ্ছে উপত্যকা কাকে বলে। উপত্যাকার গঠন প্রণালী ওকে বোঝাচ্ছে আর এদিকে অভ্যন্তরীণ পার্বতীর পর্বতের হালকা মৃদু স্পর্শ এক যেন স্বর্গীয় কোন এক ভ্যালিতে টানছে। 

নীলাদ্রি একটু সরে গেল। কিন্তু আরুশী ততক্ষণে ওর হাতের পিছনে চলে এসেছে; যেখানে কনুইয়ের হালকা স্পর্শ পাওয়া যায়। গোলাপের চোরা গন্ধের মতোই এক সুগন্ধ নাকে এসে ভিড় করছে। কোথা থেকে আসছে এ সৌরভ, কোন বসুন্ধরা থেকে?    

সেদিন কোনরকম ওকে বুঝিয়ে নীলাদ্রি অফিস রুমে এসে ঢুকল। টেবিলের সামনে থেকে চেয়ারটিকে টেনে বসল। তারপর চেয়ারটিকে আবার সামনে টেনে পিছনে মাথাটি ছাদের দিকে তাকিয়ে রইল। তুষারে ঢাকা পার্বত্য ভূমির স্পর্শ মনের গভীরে একটা সুখানুভূতির স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ছিল। কিন্তু পরক্ষণেই সমস্ত সুখানুভূতি থমকে গেল। ভাবল, এটা তার ভুল হচ্ছে। এমনও হতে পারে যে আরুশী খাতা দেখতে অসুবিধা বোধ করছিল। যার কারণে হয়তো ওর পিছনে এসে দাঁড়িয়ে খুব কাছে থেকে উপত্যকার ছবিকে বোঝার চেষ্টা করছিল। যদিও চলে যাওয়ার সময় ও একটা চোরা চাহনি রেখে গিয়েছিল। কিন্তু সেটাই তো শেষ কথা নয়। এমনিতেই তো নীলাদ্রিকে দেখলেই ও হাসে। সেই হাসিতে খুশির ঝলক খেলে যায়। সে তো অনেক দিন থেকেই।  

তারপর আরুশীর সঙ্গে নীলাদ্রির আর কয়েকদিন দেখা নেই। নীলাদ্রি ক্লাসে যায়, পড়ায় আর ক্লাস থেকে ফিরে আসে। কিন্তু মনের মাঝে কেমন যেন উসখুস ভাব। তবুও কাউকে কিছু বলতে পারে না। এমন তো অনেকেই আসে না। তারপর আস্তে আস্তে তাদের কথা ভুলে যায়। কারও তো তেমন খোঁজ নেওয়া হয় না। তাছাড়া তো ও ভাল ছাত্রীও নয় যে ওর খোঁজ রাখতে হবে। ওর রূপ ছাড়া তো কিছুই নেই।

এভাবেই দিন চলে যায়, সপ্তাহ চলে যায়। তারপর একদিন হঠাৎ করে ক্লাসে ওর আবির্ভাব। সেদিন নীলাদ্রি ক্লাসে ঢুকেই আরুশিকে দেখতে পেল ও পিছনের বেঞ্চে বসে আছে। ওকে দেখা মাত্রই একটা সুখানুভূতি জন্মালেও সেটি মনের মধ্যেই রেখে দিল। অন্য দিনের মতো পাড়াতে শুরু করল। সেদিন পড়া চলছিল নদীর গঠন প্রণালী আর তার পথ সম্পর্কে। সে যখন ব্ল্যাকবোর্ডে ছবি এঁকে সমস্ত ছাত্রীদেরকে বোঝাচ্ছিল ঠিক তখন আরুশির চোখে ওর চোখ পড়ল আর তখনই সে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ল। মুহূর্তের মধ্যে মন থেকে সব নদী মুছে গেল। ও নির্বাক।

আরুশি মুখটাকে সামান্য হাঁ করে তার জিভকে মুখের মধ্যে খেলাচ্ছিল। মনে হচ্ছে তার সেই জিভ মুখের মধ্যে এক তৃষ্ণার্ত সাপের মতো কিলবিল কিলবিল করছে আর এক দৃষ্টিতে নীলাদ্রির দিকে তাকিয়ে আছে। সেই চোখ আর মুখের দিকে ওর চোখ পড়তেই সমস্ত কথা এবং তার বোঝানোর বিষয় দিক হারা হয়ে গেল। একটু পরেই সে কিছুক্ষণের জন্য মাথা নিচু করে নিল। তারপর সে আরুশিকে লক্ষ্য করে বলল, কোন রকম বদমাশি করবি না। 

আরুশি সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে বলল, আমি কি করলাম! আমি তো কোন ডিস্টার্ব করছি না, স্যার। তাহলে আমাকে মিথ্যে মিথ্যে দোষারোপ করছেন কেন? আমি কি করলাম, বলুন? পাশের ছাত্রীদেরকে বলল, এই আমি তোকে কিছু বলেছি? আমি কোন গন্ডগোল করেছি? 

পাশে বসে থাকা ছাত্রীরা বলল, না তো! তুই কোন রকম ডিস্টার্ব করিস নি। তখন অবশ্য ওই ছাত্রীদের চোখ স্যারের দিকেই ছিল। তাই তারা কিছুই বুঝতে পারেনি। 

আরুশি বলল, তাহলে স্যার, এরকম বলছেন কেন? 

নীলাদ্রি কি বলবে, কিছুই বুঝতে পারল না। কিছুক্ষণ দম নিয়ে আবার বোঝাতে শুরু করল। কিন্তু ব্ল্যাকবোর্ডের দিকে তাকিয়ে তো কেবল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বোঝানো যায় না - ওকে ছাত্রছাত্রীদের দিকে তাকাতেই হবে। তাকে তাদেরকে বোঝাতে হবে, প্রশ্ন করতে হবে, উত্তর নিতে হবে। 

পরের বার যখন সে আবার ছাত্র-ছাত্রীদের দিকে তাকাল ঠিক তখনই আরুশি যেন এক বাঘিনীর মত তাকিয়ে তার নিচের ঠোঁটকে আলতো করে কামড়াতে শুরু করল। ও কামড়াচ্ছে আর ছেড়ে দিচ্ছে। বারবার একই কাজ করে যাচ্ছে। তখন কিন্তু ওর ঠোঁটের প্রান্তে এক নীরব হাসির ঝলক টলমল করছিল। চোখ দুটিতে যেন এক শান্ত আগুন। সম্পূর্ণ পুড়িয়ে ফেলবে না; কিন্তু উত্তাপ দেবে। 

যখন দ্বিতীয় বারের মতো নীলাদ্রিত থমকে গেল আর মুখ দিয়ে কোন কথা বেরোল না ঠিক তখন আরুশি তার ঠোঁট কামড়ানো বন্ধ করে একটু হেসেই মুখটাকে নিচের দিকে নামিয়ে নিল। কিন্তু তখনো তার ঠোঁটের প্রান্তে মৃদু হাসির উজ্জ্বলতা খেলা করছিল। সেই হাসির আলোর প্রভা সূর্যের সন্ধ্যাকালীন হাসির বিচ্ছুরণ যেমন মেঘের বুকে ছড়িয়ে পড়ে যেমন রঙ হয় ঠিক তেমন রঙ্গে রঙিন ওর সারা মুখ। এক সন্ধ্যা কালীন হাসি ছড়িয়ে পড়ছিল। যাকে বলে লজ্জারুণ আলো। সে আলোয় উদ্ভাসিত তার মুখ। এ অবস্থায় নীলাদ্রি কি বলবে? কাকে বলবে, এই মেয়েটি তাকে ডিস্টার্ব করছে? তার কাছে কি কোন প্রমাণ আছে? সেও একটু হাসির ঝলক মুখে রেখে ব্ল্যাকবোর্ডের দিকে কিছুক্ষণ চুপচাপ তাকিয়ে রইল। 

তারপর যখন সে পুনরায় ছাত্রীদের দিকে মুখ ফেরাল তখন দেখল, আরুশি মুখ নামিয়ে প্রসন্নভাবে হেসে যাচ্ছে। তখন তার চোখ দুটি হাই বেঞ্চে রাখা বইয়ের উপরে পড়ে আছে। 

নীলাদ্রি ধাতস্থ হয়ে আবার বোঝাতে শুরু করল। ঘন্টা পড়লে ও যখন ক্লাস থেকে বাইরে বেরোচ্ছিল ঠিক তখন ছাত্রীদের কন্ঠে ‘থ্যাংক ইউ, স্যার!’ কথাটি উচ্চারিত হল। কিন্তু সব চেয়ে কানে বাজল আরুশির কন্ঠটি। ও সবার চাইতে একটু চিৎকার করে ও সুর করে বলল, ‘থ্যাংক ই....উ....., স্যা....র!’ 

অফিস রুমে ফিরে আসার আগে মুহূর্ত পর্যন্ত আরুশির নির্লজ্জতার লজ্জারুণ মুখটা জ্বলজ্বল করে জ্বলছিল।

নীলাদ্রি অফিস রুমে ঢুকে চেয়ারটাকে টেনে নিয়ে ধপাশ করে চেয়ারের উপর বসে মুখটি নামিয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ রইল। যেন এক অন্য ফাগুনের রঙিন আগুনের আঁচে পুড়ে যাচ্ছে অবিরত। এ কীসের বার্তা? এ পোড়ায় যে চরম আনন্দের নেবুলা ক্লাইম্যাক্স আছে। চাঁদের দীর্ঘস্থায়ী কলঙ্ক। হয়ত বা অন্য কিছু – যা জানা নেই।

Post a Comment

Previous Post Next Post