অবলা কথা
আজিজুল হাকিম
আজ বলে যাব যত সব অবলা কথা
শুনবি কি তুই ?
আমি জানি, আমার কথার ঢেউয়ে
তুই পানসি ভাসাতে চাস -
দুলতে দুলতে কাটাতে চাস রোমাঞ্চ দুপুর।
সবুজের সাথে চোখের সম্পর্ক আমরা ভালই বুঝি
তবুও আমাদের মাঝে চাঁদ পৃথিবীর দূরত্ব থেকে যায় বরাবর
কথার সিঁড়িতে পা রেখে পাশাপাশি চলি
তবুও অনেক অবলা কথা এভারেস্ট ছুঁতে চায়।
তোরও কি, তাই?
যখন তোর বুকে চলে ঘূর্ণি ঝড়ের উৎসব
বিধ্বস্ত হয় বুকের ভ্যালি
তখন আমি নিরুপায় দর্শক
আর আমার চোখে যখন বালিঝড় অন্ধকার
তখন তুই উদাসী সন্ন্যাসিনী
স্মৃতির পাতাগুলি ঘাটলেই
এখনো আবির্ভূত হয় তোর আর আমার মাঝে
কি দারুণ একটা মধ্যাকর্ষণ শক্তি!
ওরা খেলে বেড়ায় অবলীলায় -
অস্ফূট ভাষার স্রোতে, চোখের চাহনিতে
তবুও বলব বলব করেও বলা হয়না যত সব অবলা কথা
তোরও কি তাই মনে হয় না?
সেই কবে, তোর আঁধার জানালায়
পাঠিয়ে ছিলাম জোনাকি রোদ্দুর
তুই উদ্ভাসিত হয়ে ছিলি প্রজ্জ্বলিত আলোর আবেশে
আমার কথার ঝটকায় তুই পেয়েছিলি বিস্তৃত স্বপ্নীল আকাশ
আর পাঁচিল টপকানোর নেশা -
আঁধার শৃঙ্খল ভেঙে করেছিলি খানখান।
আমার মনের প্রাসাদের তোরণ-দারে তুই দাঁড়িয়ে
আর আমিও দাঁড়িয়ে আছি তোর শিরীন উদ্যানের গলিপথে
তুই ভাবিস আমিই খুলে দিই ভালোবাসার তোরণদার
আর আমি ভবি তুই খুলে ফেলবি তোর শিরীন কিবিতকাস।
আমরা ভেসে যাই সময়ের স্রোতে কোন শব্দ ছাড়াই দিগন্ত পটে
নিঃশব্দ চোখের চাহনিতে
বুকের ভ্যালিতে এখনো ঘোড়া ছুটে চলে বেহেস্তি তৃষ্ণায়
তবুও পূর্বপুরুষের সাজানো শৃঙ্খল
ছিঁড়ব ছিঁড়ব করেও ছেঁড়া হয় না কখনো।
সিস্টেম্যাটিক রোজনামচাই আমাদের দূরত্ব একই থাকে।
কখনো সূর্য বা পৃথিবীর মতো হয়তো দূরত্ব একটু কমে বাড়ে
তবুও তোর পৃথিবীর মানচিত্রে
তোর পাহাড়ি চূড়ায়
তোর স্বর্গীয় উপত্যকায়
তোর অশান্ত আদিম নদীর সঙ্গমস্থলে
পরিব্রাজক হতে পারলাম কই?
আবার বাতাস আসে আবার ঝড়বয় ধুলোবালি উড়ে তোর চারপাশে
তখন আমার চারিপাশেও অন্য ঝড়
টাকলামাকান মরুভূমির বুকে পথ হারাই
জীবন কাফেলার পায়ের আঁচড়ে গড়ে যাই নান-লু
এক চিলতে মরুদ্যানের নেশায়
তবুও মৌ বালিঘেই আমার হাঁটা হয় রোজ!
তোর ইসারা ঠিকই বুঝি,
তুই ভালোবাসার স্যাডল খুঁজিস
মাথার উপরে একটি নীল তাঁবু খুঁজিস
চোখের তারায় একটি দিশা খুজিস
আর আমিও শিকল ভেঙ্গে চেঙ্গিস হতে চাই
ছুটে যাবে আমার জিপসি ঘোড়া তোর টকবকে চারণ ভূমিতে
একসময় বৃষ্টিরাও ধরবে গান
নাইটিঙ্গেল পাখির সুরও আওলিবাওলি খেলবে মরুতৃষ্ণা বুকে।
রচনা: ১৫/০৪/২০২৪