AJOB DESH-AZIZUL HAKIM

আজব দেশ

আজিজুল হাকিম

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

                 পর্ব - ১   


আমি রাস্তা দিয়ে আনমনে হেঁটে যাচ্ছিলাম; হঠাৎ মৃণাল দাদুর চিৎকারে থমকে দাঁড়ালাম । তিনি বললেন, “আরে আজিজ যাচ্ছিস কোথায় ? 

দেখলাম, তিনি বৈঠকখানায় বসে আছেন । মুখে একরাশ হাসি । আমি আর দাদুর কথা অমান্য করতে পারলাম না । এর আগেও পারিনি । তিনি বললেন, “আরে তুই আমার সাথে কথা না বলেই চলে যাচ্ছিস !”

আমি হেসে বললাম, “না দাদু, আসলে আমি খেয়াল করিনি” । আমি দাদুর খাছে গিয়ে পাশের চেয়াএ বসলাম । উনার পাল্লায় পড়লে বেরিয়ে আসা মুশকিল । পায়রার মতই বকম বকম করেই যাবে । ভয়ে কেউ কাছে ঘেঁষতে চায় না ।

তবুও সৌজন্যবোধ রাখার জন্য বললাম, “ক’দিন আপনাকে দেখতে পাইনি; কোথায় গিয়েছিলেন ?”

তিনি উত্তর দিলেন, “বাড়িতে ছিলাম না । কয়েক দিনের মতো বাইরে গিয়েছিলাম” ।   

-      কোথায়, দাদু ?

-      আজব দেশ ।

-      সেটি আবার কোথায় ?

-      সে অনেক অনেক দূর । কি কি দেখলাম জানিস ?

আমি মাথা নাড়লাম । মনে মনে ভাবলাম, ফাঁদে পড়ে গেলাম । 

তিনি শুরু করলেন । “দেখলাম, একটা লোকের মাথায় প্রচুর তেল; তবুও লোকজন লাইন দিয়ে তার মাথায় তেল ঢালছে । সেখান থেকে গেলাম অন্য জায়গায় । দেখলাম, টাকা হাওয়ায় উড়ে বেড়াচ্ছে; কিন্তু সেই টাকা অন্য কোথাও যাচ্ছে না । দেশের গরিব-দুঃখী মানুষেরা সেই টাকা ধরার আপ্রাণ চেষ্টা করছে – পারছে না । পিচ্ছিল মাছের মতই হাত ফসকে চলে যাচ্ছে । তারপর সেখান থেকে চলে গেলাম নদীর মোহনায় । দেখলাম, ছোট-বড়ো সব নদীরা দারুণ বেগে গিয়ে সাগরকে জল দিচ্ছে । কোন সময় দেখলাম না, সাগর কোন নদীকে জল দিচ্ছে । এসব দেখতে দেখতে আমি একটি ছোট নদীকে জিজ্ঞেস করলাম – সাগরে তো অগাধ জল আছে; তবে তোমরা কেন তাকে জল দিচ্ছ ?  

নদীটি কলকল করে হাসতে হাসতে চলে গেল । তারপর দূর থেকে বলল – বন্ধু এটাই নিয়ম ।”

       আমি উঠে পড়লাম । বললাম, “আপনার আজব দেশে আমার কোন কাজ নেই, দাদু ।” তারপর দিলাম ছুট ।

       উনি হাসতে হাসতে বললেন, “আবার আসিস, আরো শোনাব ।”     


1 Comments

Previous Post Next Post